freelancing team management

ফ্রীলান্সিং টিম ম্যানেজমেন্টঃ সফল উদ্যোগটা হবার কিছু ম্যাকনিজম!

Print Friendly, PDF & Email

যে কোন কাজে টিম ম্যানেজমেন্ট অনেক ইম্পরট্যান্ট একটি বেপার। একজন দক্ষ এবং ধৈর্যশীল উদ্যোগটা ছাড়া এই কাজটি কন্টিনিউ করা অনেক কষ্ঠসাধ্য ব্যাপার। তারপরেও কিছু কিছু নির্দিষ্ট রুলস মেনে কাজ চালিয়ে যেতে পারলে খুব সহজেই একটি ফ্রীলান্স টিম মেইনটেইন করা যায়।

freelancing team

১) ছোট প্রোজেক্ট দিয়ে পরীক্ষা করুনঃ

যখন মোটামুটি বড় আঙ্গিকে কাজ করবেন তখন একজন ফ্রীলান্স টিম এডমিন হিসেবে আপনাকে অবশ্যই আপনার টিমে কাউকে জয়েন করাতে হবে, সেটা লোকালি হোক অথবা ভার্চুয়ালি। তবে যে কজনকেই নিয়োগ করেন না কেনো, সবারকেই ছোট ছোট প্রোজেক্ট দিয়ে টেস্ট করে নিবেন অবশ্যই। কারণ, সে এক্সপার্ট হতে পারে কিন্তু আপনি আপনার জন্য তার কাজ না দেখা পর্যন্ত কিভাবে তাকে ভেরিফাই করবেন? টাই খুব বেশি সময় না নিয়ে মোটামুটি মানের একটি কাজ দিয়ে আপনার টিমের নতুন সদস্যদের টেস্ট করে নিবে ভবিষ্যতে যেন কোন প্রব্লেমের স্বীকার না হতে হয়।

২) প্রতিনিয়তই যোগাযোগ করুনঃ

আপনার টিমে সদ্য জয়েন করা সদস্যটি আপনার পাশে নাও থাকতে পারে। কারণ ফ্রীলান্সিং যেকোনো জায়গা থেকে করা পসিবল। তার সাথে যত বেশি সম্ভব যোগাযোগ রাখুন। কারণ, আপনি তাকে টিমে জয়েন করালেন অথচ খোঁজ নিলেন না এমন করে একটা সময় সে নিজেই আর আপনার টিমে থাকবে না। অথবা, তাকে কাজ নিয়েছেন কিন্তু একবারও তার খোঁজ নেননি যে সে কাজটি ঠিকঠাক মত করছে কিনা অথবা তার কাজে কোন প্রবেল্ম হচ্ছে কিনা। তার সাথে যোগাযোগের যতগুলো মাধ্যম রয়েছে সবগুলোর সাথে কানেক্টেড হোন। মনে রাখতে হবে, যতবেশি যোগাযোগ তত বেশি ইউজার স্যাটিসফিকশন।

৩) স্পেসিফিক “প্রোজেক্ট টিম” তৈরি করুনঃ

ধরুন, আপনার পুরো ফ্রীলান্স টিমে ৫০ জন মেম্বার আছেন। আপনি কয়েক ধরনের স্পেসিফিক টপিক নিয়ে কাজ করেন। কিন্তু কাউকেই স্পেসিফিক টপিকের জন্য নির্ধারণ করেন নাই। যদি এমনটা কখনও করে থাকেন তাহলে আপনার টিম কখনই ভাল রেজাল্ট দিতে পারবে না। কারণ, একই ব্যক্তিকে দিয়ে কখনই ২ধরনের কাজ ভাল হয়না। হতে পারে আপনার টিমে ১০ জন ওব ডেভেলপারের মধ্যে ৮জনই ভাল গ্রাফিক্স ডিজাইনার। কিন্তু তারা মূলতই ওয়েব নিয়ে কাজ করেন। এখন আপনি যদি তাদেরকে নিয়ে গ্রাফিক্সের কাজও করিয়ে নেন এবার ওয়েবের প্রোজেক্টও করিয়ে নেন এতে করে তাদের নির্দিষ্ট কাজে কন্সেন্ট্রেট করতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। আপনি তাদের থেকে কোন দিকেই ভাল আউটপুট পাবেন না। টাই, আপনার স্পেসিফিক কাজের জন্য স্পেসিফিক টিম মেম্বার রাখতেই হবে।

৪) কাজের চাহিদা সম্পর্কে ক্লিয়ার থাকুনঃ

আপনি টিমের এডমিন। কাজ নামাচ্ছেন আর টিমমেটদের দিয়ে করিয়ে নিচ্ছেন। একটা বিষয় সবসময় মাথায় রাখবেন যখন আপনার বায়ারের সাথে নতুন কোন প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ আরম্ভ করতে যাবেন এবং সেই কাজটি আপনার টিম মেম্বার দিয়ে করাবেন। বায়ার কি ধরনের কাজ চাইছেন এবং আপনার টিম মেম্বার সেই কাজটি করে দিতে পারবে কিনা। কাজটি যদি কোন ডিজাইন রিলেটেড হয় তবে তার চাহিদা কেমন, ডিজাইন কি ধরনের হবে, কাজে ডেডলাইন কত দিনের এবং কাজটির জন্য কত টাকা পেতে পারেন এবং আপনার টিম মেম্বার সেই কাজটি কতদিনে করে দিতে পারবে। উল্লেখ্য, টিম মেম্বারের সাথে টাকার ব্যাপারে আলোচনায় না যাওয়াই ভাল যদি না তাকে প্রোজেক্টওয়াইজ চুক্তিতে কাজে না নিয়ে থাকেন। সব ঠিকঠাক থাকলে কাজ শুরু করুন!

৫. সময় মত প্রজেক্ট ডেলিভারিঃ

ফ্রীলান্সিং জগতে সময়ের মুল্য আর ১০টি কাজের চেয়ে আমি বেশি উপরে রাখবো। কারণ, আপনার সামান্য সময় অসচেতনতার জন্য বিশাল লসের সম্মুখীন হতে পারেন। এমনটাও হতে পারে, আপনার আন আভেইলাবিলিটির জন্য বায়ারের সব কাজ হারাতে পারেন। তাই, আপনাকে সব সময় সময় সচেতন থাকতে হবে হোক আপনি একেয়াই কাজ করেন অথবা টিমে, যেকোনো সিচুয়েশনে।

সময় সচেতনতা ফ্রীলান্সিং জগতে অনেক বড় একটি ফ্যাক্ট। যেই সময়কে ইম্পরটেন্স দিবে না তার জন্য ফ্রীলান্সিং না। ধরুন, আপনি বায়ার থেকে ৭দিন মেয়াদের একটি ওয়েবসাইট ডিজাইনের প্রোজেক্ট পেলেন। বায়ার আপনাকে প্রয়োজনীয় সকল ইনফো, সাইটের পিএসডি টেমপ্লেট দিয়ে দিয়েছেন। এখন আপনার কাজ হল, সেদিন, সেই মুহূর্ত থেকেই কাজ শুরু করে দেয়া, যদি না আপনি অন্য কোন প্রোজেক্টে ব্যস্থ না থাকেন। ব্যস্থ থাকলে আপনার রানিং প্রোজেক্টি দ্রুত এবং দক্ষতার সাথে ভালভাবে সম্পন্ন করে নতুন প্রোজেক্টে কাজ লেগে পড়ুন। ভুলেও কখনও নতুন প্রোজেক্ট শুরু করবেন এমন ভেবে আগের প্রোজেক্টে কম প্রায়োরিটি দিবেন না। আপনার বেশি সময় দরকার হলে বায়ারকে আগেই বলে নিন। তিনি অবশ্যই আপনার কাজের ইম্পরট্যান্স বুঝবেন। সাথে নিজ কাজের জন্য সময় দিতে তিনি বাধ্য। তবে আবার বলছি, অহেতুক, অসামজস্য সময় চাইবেন না। দরকার হলে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে ২/৩ দিন বেশি চেয়ে নিবেন কিন্তু ৭দিন বা ১০দিন কখনই না। কারণ যত বেশি দেড়ি করবেন, বায়ার আপনার কাজে গতি এবং দক্ষতা নিয়ে সন্ধিহান হবে। ধরজ ধরে বর্তমান কাজ করিয়ে নিলেও তার পরের প্রোজেক্ট গুলো আর আপনার কপালে জুটবে না।

৬) টিম মেম্বারদের মোটিভেট এবং হাসিখুশি রাখুনঃ

ফ্রীলন্সাররা যেমন মুক্ত জগতে কাজ করে ঠিক তেমনি তারা যদি কোন টিমের আওয়াতেও কাজ করে থাকে তবুও তাদের সেই মুক্ত ভাবেই কাজ করতে দিতে হবে। ধরুন, আপনি আপনার টিম এডমিন এর দেয়া একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন করছেন। সাথে সাইট এর পিএসডি ফাইলও পেয়েছেন। আপনি পিএসডি দেখেই কাজ করবেন সেটাই স্বাভাবিক কিন্তু আপনি যদি বার বার আপনার এডমিন থেকে “এভাবে করেন, সেভাবে করেন”~ এমন কথা শুনতেই থাকেন তবে আপনি সেই কাজের চার্ম হারিয়ে ফেলবেন অবধারিত। সেই হিসেবে আপনি একজন টিম এডমিন হিসেবে বেশির ভাগ সময়ই আপনার প্রোজেক্ট এর ডেডলাইন জানিয়ে দিয়ে বাকি কাজগুলো টিম মেম্বারের উপরে ছেড়ে দিন। এতে করে সে কমফোর্ট ফিল করবে এবং কাজটি সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে পারবে। আপনি শুধু মাঝে মাঝে আপডেড জানবেন কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে। কোথায় ভুল বা মিসম্যাচ হলে সেটা পরে ধরিয়ে দিন। সব সময় তাদের কাজের অন্য বাহবা দিন, তবে অবশ্যই মিছে বাহবা না! আর হ্যাঁ, সব সময় চেষ্টা করুন টিমের সবার সাথে হাশিখুশি ব্যাবহার করতে, আপনি যতই প্রব্লেমের মধ্যে থাকুন না কেনো। কারণ, আপনার মনের অবস্থা অথবা পার্সোনাল কোন ব্যাপার যেন আপনার টিমের কোন মেম্বারকে আঘাত না করে দিকে খেয়াল রাখাটা আপনার প্রধান কাজ।

এছাড়াও একটি ফ্রীলান্স টিমকে ম্যানেজ করবার আরও অনেক উপায়, উপকরন আছে। নেটে সার্চ করুন দেখা মিলবে!

আজ এই পর্যন্তই!
সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন। 🙂

5 thoughts on “ফ্রীলান্সিং টিম ম্যানেজমেন্টঃ সফল উদ্যোগটা হবার কিছু ম্যাকনিজম!

  1. এটা একটা বোম ফাটানো পোষ্ট ++
    পড়ে ফেললাম খুব মনোযোগী ছেলের মত

  2. ভাই অনেক সুন্দর লেখছেন, অনেক উপকার হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.