ওডেস্ক, ইলান্স বা ফ্রীলান্সারের মত ভার্চুয়াল জব মার্কেটগুলোর সাথে বর্তমানে থিমফরেস্ট জনপ্রিয়তার ঊর্ধ্বমুখে। সারাবিশ্বে বাঘা বাঘা ওয়েবসাইট ডেভেলপার এই মার্কেটপ্লেসে তাদের কাজ সাবমিট করে থাকেন। এগুলো নিয়ে বেশি বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু, এই বাঘা বাঘা ডেভেলপারদেরপ পাশে থিম ফরেস্টে আপনার থিম বা যেকোনো আইটেমকে স্থান দিতে হলে কিছু নিয়ম এবং আপনার আইটেমে স্বতান্ত্রিক বিশিষ্ট থাকতেই হবে।
চলুন দেখি, কি কি নিয়ম/শর্ত পালন করতে হবে…
১) ইউনিক ডিজাইন/লেআউটঃ
থিম ফরেস্ট বা এনভাটো মার্কেটপ্লেসকে বলা হয় ডিজাইনারদের স্বর্গ! কারণ, এখানে প্রতিনিয়ত এতো এতো ডিজাইন সাবমিট হয় কিন্ত ২/১ জায়গায় ভাগ্যগুণে মিলের দেখা মিললেও কারও ডিজাইনের সাথে কারোটির হুবহু মিল পাওয়া যায়না। যদি কেউ করেও থাকে তবে পরের জনের আইটেমটি এ্যাপ্রুভ হয়না। কারণ, থিম ফরেস্টে সবসময় ইউনিক ডিজাইনের ভ্যালু সবার উপরে। এক্সট্রাঅরডিনারি কিছু করতে পারলেতো কথাই নেই। তাই, থিম ফরেস্টের জন্য ডিজাইন করবার পূর্বে তাদের সাইটের আইটেম গ্যালারীতে একবার ভালমতো ট্যুর করা উচিৎ! যাতে আপনার আইটেমটিকে ইউনিক রুপ দিতে পারেন। তদুপরি, ভালো মানের ডিজাইন কনসেপ্টও পেতে পারেন পুরো গ্যালারীতে চোখ বুলাতে পারলে। ইউনিক ডিজাইন কনসেপ্ট পেতে হলে আপনাকে ভাবুক মনের অধিকারী হতে হবে, ডিজাইন নিয় যত ভাবেতে পারবেন ইউনিক্যালি, আপনি তত বেশি ইউনিক ডিজাইন কনসেপ্ট জেনারেট করতে পারবন।
ইউনিক ডিজাইন কন্সেপ্টের জন্য নিচের লিঙ্কগুলো দেখতে পারেনঃ
http://www.smashingmagazine.com/2013/08/29/innovative-appraoches-web-layout/
http://www.techwyse.com/blog/website-design/10-extremely-creative-and-cool-website-layout-design-2/
http://www.designyourway.net/blog/inspiration/spectacular-web-designs-with-unique-layouts-33-examples/
http://www.pinterest.com/skylinedesign/unique-layout-websites/
http://www.smashingmagazine.com/2013/08/29/innovative-appraoches-web-layout/
২) ভ্যালিড এবং ক্রস ব্রাউজার সাপোর্ট কোডঃ
আমরা যারা সাধারণ ক্লাইন্টের সাইটের জন্য এইচটিএমএল, সিএসএস বা জেএস কোড লিখি তারা প্রায়ই নিজেদের কোড ভ্যালিড কিনা, সব ব্রাউজার সাপোর্ট করে কিনা তার দিকে নজর দেই না। একজন আদর্শ কোডার অবশ্যই এই কাজটি করে থাকেন। কিন্তু যারা করেননা তাদের কি হবে? যাক সে কথা, আপনি আদর্শ অথবা নীতিহীন যা-ই হোন না কেনও থিম ফরেস্ট সহ এনভাটো মার্কেটপ্লেসের যেকোনো সাইটে থিম থিম/কোড সাবমিট করার পূর্বে আপনার কোড অবশ্যই ভ্যালিড করে নিবেন এবং ক্রস ব্রাউজার সাপোর্ট করে কিনা সেটা নিশ্চিত হয় নিবেন।
এইচটিএমএল কোড ভ্যালিডেশান লিঙ্কঃ http://validator.w3.org/
সিএসএস কোড ভ্যালিডেশান লিঙ্কঃ http://jigsaw.w3.org/css-validator/
জেএস কোড ভ্যালিডেশান লিঙ্কঃ http://jslint.com/
ব্রোকেন লিঙ্ক ভ্যালিডেশান লিঙ্কঃ http://validator.w3.org/checklink
ক্রস ব্রাউজার সাপোর্টের জন্যঃ
নরমালাইজ লিঙ্কঃ http://necolas.github.io/normalize.css/
মডানাইজারঃ http://modernizr.com/
এইচটিএমএল৫ সিমঃ https://github.com/aFarkas/html5shiv/zipball/master
এইচটিএমএল৫ বইলারপ্লেট টেম্পলেটঃ http://html5boilerplate.com/
৩) রিসোর্স ফাইলের ক্রেডিটঃ
আমরা অনেকেই গুগল করে ইমেজ, জেএস প্লাগিন, স্লাইডার ইউজ করে থাকি। এটা খারাপ না তবে, থিম ফরেস্টে এগুলো সাবমিট করার সময় অবশ্যই সেই ফাইলগুলো আসল মালিকের ক্রেডিট উল্লেখ করতে ভুলবেন না। ক্রেডিট না দিলে সেটি পাইরেসি হয়ে থাকে এবং থিম ফরেস্ট পাইরেসি কনটেন্ট কখনই এ্যালুউ করে না।
৪) কমেন্ট/হিন্ট ব্যবহার করাঃ
আপনি যে কোডটি সাবমিট করছেন সেটি অবশ্যই কেউ ইউজ করবে তার পারপাজ সার্ভ করতে। তার ইচ্ছামত এডিট করতে চাইবে। কিন্তু, আপনি আপনার এইচটিএমএল কোডের কোথায় শুরু/শেষ করেছেন, সিএসএস কোড কোনটি কোন সেকশনের, এবার জাভাস্ক্রিপের কোন ফাংশনটি কোথায় তৈরি করেছেন, কি কি এডিট করলে ফাইলের ক্ষতি হবে না এগুলো যদি উল্লেখ না করেন তবে অন্য একজন আপনার কোডের মাঝে শুধু সাঁতার কাটবে, তবে এক্সপার্টদের ব্যাপারটা আলাদা (কত জনই বা এক্সপার্ট!!)। তাই, আপনার কোড অবশ্যই সেকশনওয়াইজ কমেন্ট এবং হিন্ট উল্লেখ করতে হবে। কমেন্ট/হিন্ট একটি মানসম্পন্ন থিমের অন্যতম বিশিষ্ট! এটা না থাকলে থিম এ্যাপ্রুভ হবার সম্ভাবনা অনেক কম!
৫) ডকুমেন্টেশনঃ
আপনি যে ধরণেরই থিম, কোড সাবমিট করে না কেনও, প্রতিটি আইটেমের জন্য ফুল ডকুমেন্টেশন দিতে হবে। কারণ, আপনার থিমটি অন্য একজন ক্রয় করে ইউজ করার সময় থিম বা কোডের কোথায় কোন সেটিং ঠিক করতে হবে, কোথায় মেন্যু যুক্ত করতে হবে। কিভাবে এবং কোন কোন প্লাগিং ইন্সটল করতে হবে এসব কিছু ইমেজ সহ বর্ণনা করতে হবে। থিম ফরেস্টের একটি নিজেস্ব গাইডলাইন আছে ডকুমেন্টেশন তৈরি করা।
নিচের লিঙ্কগুলো দেখতে পারেনঃ
http://revaxarts-themes.com/documenter/
http://blog.themeforest.net/site-news/building-better-template-documentation/?_ga=1.55104299.1837993779.1386436017
http://reganto.orange-themes.com/documentation/
http://freecss.info/css-tutorials/top-10-tips-for-selling-templates-on-themeforest/
৬) ডিজাইন লুকঃ
থিম ফরেস্টের জন্য তৈরি করা ডিজাইন গুলো যেকোনো দিক থেকে ওয়ার্ল্ড ক্লাস ডিজাইন। তবে ওয়ার্ল্ড ক্লাস বলতেই আবার অনেক রঙ-বেরঙ্গের সংমিশ্রণ, কমপ্লেক্স ডিজাইন এবং চোখ ধাঁধানো ফ্ল্যাশ কিংবা জাভাস্ক্রিপ্টের আলোকসজ্জা নয়। ডিজাইন হতে হবে নিট অ্যান্ড ক্লিন এবং ভিজুয়াল প্রেসেন্টেশন হতে হবে আকর্ষণীয়। এজন্য খানিকটা মার্জিন বা প্যাডিং বেশি ইউজ করলে ক্ষতি দেখছি না। তবে, বুঝে শুনে মার্জিন এবং প্যাডিংয়ের ব্যাবহার করা উচিৎ। ঠিক যেখানে দরকার সেখানেই। ইমেজ ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করাতে হবে, যেখানে ইমেজ ছাড়া শুধু সিএসএস দিয়ে কাজ চালিয়ে দেয়া যায় সেখানে কি দরকার ইমেজ ব্যবহার করে টেম্পলেটের লোডিং টাইম বাড়নোর। লোডিং টাইম বেশি হলেও থিম এ্যাপ্রুভ নাও হতে পারে। আর ইমেজ দরকার এমন জায়গায় হাই রেজুলেশনের ইমেজ ইউজ করুন, যাতে বড় স্ক্রিনেও ইমেজের কোয়ালিটি নষ্ট না হয়। তাই এই বিষয়গুলো গুরুপ্তের সাথে খেয়াল রাখতে হবে।
৭) আইকন এবং টাইপোগ্রাফিঃ
আইকন এবং টাইপোগ্রাফি যেকোনো ডিজাইনের জন্য অন্যতম একটি ব্যাপার। আপনি যত সুন্দর থিম ডিজাইন করেন না কেনও। আপনার আইকন এবং টাইপোগ্রাফি ভালো না হলে মোটেও সেটি মার্কেট পাবে না। আইকন এবং টাইপোগ্রাফির জন্য কয়েকটি বিষয় লক্ষণীয়। ১) সঠিক ফন্ট নির্বাচন করা, ২) ফন্ট স্টাইল ন্যারো, বল্ড, সেমি বল্ড হবে কিনা সেটি নির্ধারন করা, ৩) লাইন হাইট ঠিক দেয়, ৪) আইকনটি যেনও ট্রান্সপারেন্ট পিএনজি ফরম্যাট হয়, । এই বিষয় গুলো সিন্সিয়ারলি খেয়াল করতে হবে। ৪টি বিষয়েরই সঠিক সন্নিবেশ ঘটাতে হবে।
ভালো মানের ফন্ট পেতে নিচের ডাইরেক্টরি গুলো দেখতে পারেনঃ
https://www.google.com/fonts
http://fortawesome.github.io/Font-Awesome/get-started/
http://fontcustom.com/
http://www.fontsquirrel.com/
৮) কালারঃ
কালার একটি ডিজাইনের মুখ্য উপাদান। আপনার ডিজাইন যতই এ্যাট্রাক্টিভ হোক না কেনও, কালার কম্বিনেশন ঠিক না থাকলে কখনই মার্কেটে ভালো অবস্থানতো দূরের কথা থিম ফরেস্টে এ্যাপ্রুভাল-ই পাবে না। তাই কালারের ব্যাপারে সচেতনতা এবং ইউআই কলার কনসেপ্ট রিচ করতে হবে। বে নি আ স ক ম লা এই টাইপের কালার ব্যবহারের ক্ষেত্রে দৃষ্টি শক্তি তীক্ষ্ণ রাখতে হবে। আরও একটি ব্যাপার, একেক রিজিয়নে একেক কালারের ভিন্ন ভিন্ন অর্থ এবং তাৎপর্য বহন করে। আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি যে থিম বা ডিজাইন করছেন সেটি কোন রিজিয়নকে টার্গেট করে। যদি আপনার টার্গেট রিজিয়নের জন্য কালার ম্যাচিং করতে পারেন তবেই আপনার থিমের বা ডিজাইনের মার্কেট ভালো হবে। তাই কালারের ব্যাপারে যথেস্থ রুচিশীলতার পরিচয় দিতে হবে।
কালার কন্সেপ্টের জন্য নিচের লিঙ্কগুলো দেখতে পারেনঃ
http://www.worqx.com/color/
http://www.colormatters.com/color-and-design/basic-color-theory
http://www.creativebloq.com/colour/colour-theory-11121290
http://www.ics.com/blog/color-theory-and-user-experience
৯) ভিজুয়াল হাইয়ারআর্কিঃ
ভিজুয়াল হাইয়ারআর্কি সম্পর্কে বলতে গেলে অনেক বিস্তারিত আলোচনা চলে আসবে। তাই আমি সংক্ষেপে বলছি। ভিজুয়াল হাইয়ারআর্কি হচ্ছে আপনার পুরো ডিজাইনের প্রেসেন্টেশন এবং সেটি একজন ভিসিটরকে কত দ্রুত আকর্ষিত করতে পারবে। এটি মূলত একটি ইউএক্স (ইউজার এক্সপেরিয়েন্স) ম্যাটার। আপনার ডিজাইনে কালার, টাইপোগ্রাফি, লেআউট স্ট্রাকচার, কনটেন্ট প্লেসমেন্ট, ইউজার ইন্টার্যাকশন এসব কিছু নিয়েই ইউএক্স এবং ভিজুয়াল হাইয়ারআর্কি। ভিজুয়াল হাইয়ারআর্কি একটি ন্যাভিগেশন মেন্যু দিয়ে বুঝানো যাকঃ
ধরুন, আপনার সাইটে একটি মাল্টি লেভেল মেন্যু আছে। সেটিতে কয়েকটি স্তরের সাব মেন্যু আছে। খেয়াল রাখতে হবে, আপনার সেই সাব মেন্যু গুলো যেনও ৩ স্তরের বেশি না হয়। প্রয়োজনে আরেকটি মেইন মেন্যু তৈরি করুন কিন্তু ৩ স্তরের বেশি না। এইটি আদর্শ ন্যাভিগেশন মেন্যুতে ৩ স্তরের বেশি সাব মেন্যু থাকে না। আর অতিরিক্ত স্তর থাকার কারণে ইউজারের ন্যাগেটিভ ইন্টের্যাকশন তৈরি হবে যা আপনার ডিজাইনের ভিজুয়াল হাইয়ারআর্কি-তে যথেষ্ট নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ভিজুয়্যাল হাইয়ারআর্কি সম্পর্কে কিছু গুরুপ্তপূর্ণ লিঙ্ক দিলাম আপনারদের বুঝার সুবিধার্থেঃ
http://www.copyblogger.com/visual-hierarchy/
http://en.wikipedia.org/wiki/Visual_hierarchy
https://webdesign.tutsplus.com/articles/understanding-visual-hierarchy-in-web-design–webdesign-84
১০) সাপোর্টঃ
এনভাটো মার্কেটপ্লেসে সফল হতে হলে আপনাকে অবশ্যই ক্রেতাদের বিক্রয় পরবর্তী সাপোর্ট দিতে হবে। রিচ ডকুমেন্টেশনের পরপরই সরাসরি সাপোর্ট সিস্টেম রাখতে হবে। যাতে উক্ত ক্রেতা আপনার প্রোডাক্ট ক্রয় করার পর কোন সমস্যায় পড়লে আপনার থেকে সহায়তা নিতে পারে। মনে রাখতে হবে, আপনি যদি সাপোর্ট দিতে না পারেন তবে মুহূর্তেই আপনার প্রোডাক্টের সেল কমে আসবে। তাই বেশি সেল পেতে হলে ভালো মানের সাপোর্ট সেন্টারের ব্যবস্থা রাখতেই হবে। আপনি দু’ভাবে সাপোর্ট দিতে পারেনঃ ১) সরাসরি সেই থিম বা ডিজাইন মার্কেটপ্লেসে এবং ২) আপনার নিজের সাপোর্ট পোর্টাল খুলে। আমার দৃষ্টিকোন থেকে নিজ পোর্টাল থেকে সাপোর্ট দেয়াকে উপযুক্ত মনে করি। এতে আপনার যে আইটেমগুলো থিম ফরেস্টে সেলের জন্য রাখেন নাই সেগুলো আপনার রিটার্নিং ক্রেতাদের কাছে সেল হবার ভালো সম্ভাবনা থাকে। একটি বিষয় গুরুপ্তের সাথে মনে রাখবেন, আপনার যে আইটেমটি থিম ফরেস্ট বা এনভাটোর অন্য কোন সাইট থেকে সেল করার জন্য আপলোড দিয়েছেন, সেটি ভুলেও আপনার সাইট থেকে সেল করার চেষ্টা করবেন না। এটা সম্পূর্ণভাবে এনভাটোর টার্মস এবং কন্ডিশনকে ভাঙ্গে!
মোটামুটি এইগুলোই হল, থিম ফরেস্ট বা এনভাটো মার্কেটপ্লেসে কাজ করার নিয়ম, পদ্ধতি, শর্ত বা নীতিমালা। এছাড়া এর মাইনর কিছু ব্যাপার থাকে যেগুলো আপনি আপনার আইটেম সাবমিট করতে গিয়ে লক্ষ্য করবেন। সেগুলো নাহয় নিজেই বুঝে নিবেন।
আজ পর্যন্তই!
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন!
ধন্যযোগ! 🙂
আপনি যে টিউটরিয়াল লেখলেন তাতে তো মনে হচ্ছে আপনি একজন envato স্পেসালিস্ট বাট জানতে ইচ্ছা করতেছে envato তে আপনি কি elite অথর না envato তে আপনার কয়টা আইটেম আছে??
thanks
May be this is very helpful tune